আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একের পর এক নিষেধাজ্ঞার জবাবে এবার ‘বন্ধুত্বপূর্ণ নয়’ এমন দেশসমূহে পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে রাশিয়ায় বাণিজ্যিক কর্মকান্ড পরিচালনাকারী পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর ওপরও।
এসব পণ্যের মধ্যে আছে টেলিকম, চিকিৎসা সামগ্রী, কৃষি পণ্য, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম, গাড়ি, রেলের বগি, কন্টেইনার, টারবাইন ও কাঠ। এছাড়া যেসব বিদেশি কোম্পানি রাশিয়া রপ্তানিমূখী পণ্য প্রস্তুত করে, তাদের কর্মকাণ্ডেও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন স্বাক্ষরিত ওই সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। তবে প্রয়োজনে এই মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।
এ সম্পর্কে বলা আদেশে হয়, ‘বিদেশে তৈরি পণ্য রাপ্তানি নিষিদ্ধ করা রাশিয়ার বাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি ছিল।’ নিষেধাজ্ঞার পরবর্তী ধাপে রাশিয়ার বন্দরগুলোতে অবস্থানরত পশ্চিমা দেশগুলোর জাহাজ বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ওই আদেশে।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্তত ৪৮ টি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ আগে একবার বলেছিলেন, রাশিয়ায় পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। এমনকি পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর সম্পদ জাতীয় করণ করার হবে সতর্কবার্তাও দিয়েছিলেন তিনি।
ইতোমধ্যে বাস্তবে রূপ নেওয়া শুরু করেছে সেই সতর্কবার্তা। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদে ক্যাটারপিলার অ্যান্ড রিও টিনটো, স্টারবাকস, সনি, ইউনিলিভার ও গোল্ডম্যান স্যাচসহ বেশ কিছু কোম্পানি রাশিয়ায় তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় এসব কোম্পানির যে সম্পদ রয়েছে, তা জাতীয়করণ করা বিষয়ক আইন প্রণয়ন করছে রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমা। বুধবার সেই আইনের খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মেদভেদেভ বলেন, ‘রুশ সরকার ইতোমধ্যে দেশে ব্যবসা পরিচালনারত পশ্চিমা কোম্পানিগুলোকে দেউলিয়া ঘোষণা করা ও তাদের সম্পদ জাতীয়করণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে।’
‘যেসব বিদেশি কোম্পানির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, পুনরায় আমাদের বাজারে ফেরা কঠিন হবে সেসব কোম্পানির জন্য।’